বাউফলে পল্লী বিদ্যুৎ চার্জ সর্ম্পকে ধারনা নেই গ্রাহকদের

বাউফলে পল্লী বিদ্যুৎ চার্জ সর্ম্পকে ধারনা নেই গ্রাহকদের

সাইফুল ইসলাম, বাউফল : ভোক্তা অধিকার হিসাবে একজন গ্রাহকের জানার অধিকার থাকলেও বিদ্যুৎ চার্জ সর্ম্পকে তাদের কোন ধারনা নেই। ডিপোজিট ওয়ার্ক ব্যতীত সকল ধরনের সরকারী খরচে বিদ্যুৎ লাইন নির্মান করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করে থাকে। নতুন সংযোগে ডিজিটাল মিটার যা বিদ্যুৎ ছাড়া মিটার রিডিং দেখা যায় না। সেখানে তারা বিদ্যুৎ বন্ধ করে আনুমানিক বিল করে গ্রাহকদের ঘাড়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। একজন সচেতন গ্রাহক হিসাবে বিদ্যুৎ বিল সংক্রান্ত বিষয় হচ্ছে, কোন তারিখ, কত রিডিং, বিদ্যুৎ চার্জ নীট মূল্য কত, বিলম্ব মাসুলসহ সর্বমোট বিল এবং বিল পরিশোধ শেষ তারিখ জানার প্রয়োজনবোধ করছে না। গ্রাহকদের সুযোগ বুঝে বিদ্যুৎ অফিস সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নানা অনিয়ম করে আসছে। নতুন কৌশল সাবষ্ট্রেশন থেকে বন্ধ রাখা এবং মিটার রিডিং বাড়িয়ে পুষিয়ে নেওয়া হয়।

জানাগেছে. গ্রামের সাধারণ গ্রাহক অফিসে না গিয়েই সংযোগ বিচ্ছিন্ন ভয়ে সঙ্গে সঙ্গে নগদ টাকা দিয়ে ওই বিল পরিশোধ করেন। মিটার রিডার ম্যানরা মাঠ পর্যায়ে গ্রাহকদের বাড়ি না গিয়েই অনুমানিক ভাবে বিল করেন। ফলে বছর শেষে গ্রাহকদের বড় অঙ্কের একটি বিল হয়, যা অনেক গ্রাহকের পরিশোধ করা কষ্টকর হয়ে যায়। মিটার রিডিংয়ের চেয়ে অতিরিক্তি বিল করা হয়। সরেজমিন আরো পরিলক্ষিত হচ্ছে, পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহক বিল কর্মরত মিটার রিডিং লাইনম্যান বিতরন না করে স্ব স্ব এলাকায় দালাল মাধ্যমে প্রেরন করে। যার কারনে এলাকায় গ্রাহক সময়মতো বিল কাগজ হাতে পায়না। বেশিরভাগ বিল কাগজ জমা তারিখ পওে হাতে পেয়ে থাকে। বেশির ভাগ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হবে ভয়তে নির্ধারিত বিলের ৫% জরিমানা দিয়ে বিল জমা করে থাকে।
উন্নয়ন ও প্রযুক্তির যুগে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় সেবাখাত হচ্ছে বিদ্যুৎ। বিদ্যুতের বিকল্প চিন্তা করা যায় না বলা চলে। সরকার প্রত্যেক ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দেয়ার দৃঢ় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। ২০২১ সালের মধ্যে সারাদেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করার লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহন করেছে। বৃদ্ধি করা হচ্ছে গ্যাস, কয়লা এবং তেল চালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। বিদ্যুৎ অফিস জুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে টার্গেটভিত্তিক গ্রাহক বৃদ্ধি। বাড়ছে বিদ্যুৎ সংযোগ গ্রাহক সংখ্যা। ক্ষমতাশীন আওয়ামীলীগ সরকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এমপি আনুষ্ঠানিক ভাবে স্ব স্ব এলাকায় নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ উদ্বোধন করে আসছেন। বিদ্যুতায়িত এলাকায় তেমনি বিদ্যুৎ ব্যবহারে প্রতিটি পরিবারে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের সাথে খরচ পরিমান বেড়ে গেছে।
খোজ নিয়ে আরো জানাগেছে, লোডশেডিং ও ম্যানেজমেন্ট এবং ইলেকট্রিসিটি এ্যাক্ট। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখতে পর্যাক্রমে কোন কোন এলাকায় সাময়িক ভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার নামই হলো লোড শেডিং। বিদ্যুৎ উৎপাদন সীমিত এবং ইহা এমন এক তার শক্তি যাকে সয় করা সম্ভব নয় সেই জন্য সীমিত শক্তিকে কার্যকর ভাবে সুপরিকল্পিত ভাবে উপায়ে ব্যবহার করার নামই লোড ম্যানেজমেন্ট। অর্থাৎ পিক লোড আওয়াওে (সন্ধা ৫ টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত। সরকারী ভাবে বিদ্যুৎ সিস্টেম লস এর ভাগ সর্বোচ্চ দেয়া ১২.৫০% কিন্তু উপজেলায় সিস্টেম লস হয় ২০থেকে ২২% প্রতি কিলোওয়াট আওয়ার। এর কারন হচ্ছে, অটো রিকসা ও ব্যাটারীচালিত রিকসা যা রাতের আধারে হুকিং করে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে থাকে। প্রতিদিন ১ ঘন্টা পর ১ ঘন্টা লোড শেডিং রাখা হচ্ছে। লোডশেডিং রেজিষ্টার থাকা সত্বেও সাবষ্ট্রেশন লাইনম্যান ইচ্ছামাফিক লোডশেডিং দিয়ে আসছে। ফলে উপজেলার সকল মিল কলকারখান মালিক, আইসিটি উদ্যোক্তা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, নির্দিষ্ট সময় লোডশেডিং না দিয়ে দৈনিক ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং দিলে বিদ্যুৎচালিত যন্ত্র বেশি নষ্ট হচ্ছে।
এ ছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, গ্রাহকদের বছর শেষে বিল পরিশোধের প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার নিয়ম থাকলেও এ উপজেলায় গ্রাহকদের ওই প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয় না। এ ক্ষেত্রে বকেয়া আদায়কারী কর্মীরা একটি ভুয়া বিল কাগজ তৈরি করে বছর শেষে বকেয়া বিল আদায় করার নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতারণা করে টাকা আদায় করেন।¬ অতিরিক্ত বিল অফিসের গুটি কয়েক কর্মকর্তা-কর্মচারী ভাগবাটোয়ারা করে নেন।